দূর্গাপুর ইতিহাস || নাসিরনগর ব্রাক্ষণবাড়ীয়া || ভলাকুট ইউনিয়ন দূর্গাপুর

দূর্গাপুর ইতিহাস ঐতিহ্য

 ইতিহাস ও ঐতিহ্য ঘেরা নদী বেষ্টিত এক অজপাড়া গ্রাম দূর্গাপুর , যার এক প্রত্যক্ষ নিদর্শন হচ্ছে দূর্গাপুর চৌধুরী বাড়ি । এখনো বিভিন্ন স্থাপনা মাথা উচুঁ করে বিভিন্ন স্থানে দাড়িয়ে আছে।


ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার অন্তর্ভুক্ত নাসির নগর উপজেলার ভলাকুট ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী গ্রামটির নাম দূর্গাপুর। নদী বেষ্টিত গ্রামটি দেখতে চোখে পড়ার মতো সৌন্দযের অধিকারী।গ্রামটির পশ্চিম-উত্তর দিকে বেমালিয়া নামক একটি ছোট নদী বয়ে গেছে। এবং উত্তর-পূর্ব দিক দিয়ে আরেকটি ছোট নদী এসে পার্শ্ববর্তী মেঘনার সাথে তিন নদীর মোহনাতে মিলিত হয়ে এক অপুরূপ দৃষ্টিনন্দন নদী মাতৃক এই দেশের পরিচয় বহন করে আছে। বেমালিয়া নদীর অপর প্রান্তে রয়েছে বিলের পাড় নামক আরেকটি গ্রাম,যা চাতল পাড় নামক অন্য একটু ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত।এই অঞ্চলের বেশির ভাগ গ্রাম গুলো নদীকে কেন্দ্র করেই গড়ে উঠেছে। কারণ স্বাধীনতার পূর্ববর্তী সময়টাতে নদীতে মাছ ধরা আর কৃষি কাজ ই ছিল এখানকার প্রধান জীবিকা,আর দুইটি পেশার সাথেই নদীর পানি ছিল মূল উৎস। 

দূর্গাপুর ইতিহাস ঐতিহ্য সৃষ্টি


গ্রামটির বয়স প্রায় ২৫০ বছরেরও বেশি বলে স্থানীয়দের ধারণা।গ্রামটির সূচনালগ্ন থেকে হিন্দু ,মুসলিম,যৌথ ভাবে মিলেমিশে বসবাস করে আসছে,,আজ থেকে প্রায় ১২০-৪০ বছর আগে এই এলাকার আধিপত্য হিন্দু সম্প্রদায়ের হাতে ন্যস্ত ছিল।তখনকার সময়ে সংখ্যালঘু মুসলিম পরিবারের সদস্যদের দিন কেটে যেত দৈনন্দিন চাহিদার যোগানের পেছনে ছুটতে ছুটতে। গ্রামটিতে আভিজাত্যের ব্যবধান থাকলেও আভিজাত্যের প্রভাব কাটিয়ে নির্যাতনের অভিযোগে ছিল না কোথাও। অভাবগ্রস্তদের পাশে থেকে সকলের সহযোগিতায় মিলেমিশে বসবাস করেছে বলে আজও গ্রামটিতে হিন্দু মুসলিম একে অপরের কাদে কাদ রেখে বসবাস করছে।হিন্দু সম্প্রদায়ের দুর্গাপূজা সহ বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠান এবং মুসলমানদের ঈদ ছাড়া অন্যান্য ধর্মীয় অনুষ্ঠানে নিমন্ত্রণ আমন্ত্রণ ও অংশগ্রহণের মাধ্যমে আনন্দ উদযাপন করে আসছে।


দূর্গাপুর চৌধুরী বাড়ির উৎপত্তি হয়েছে আজ থেকে প্রায় ১১৫ বছর আগে। তার আগে চৌধুরী বংশের কোনো প্রকাশ ঘটেনি। জানা যায় চৌধুরী বংশের পূর্ব পুরুষগণ বর্তমান নরসিংদী জেলার রায়পুরা উপজেলার সদর ইউনিয়নের আলগী, বাখর নগর গ্রামের অতি সাধারণ একটি পরিবার জীবিকার তাগিতে দূর্গাপুর গ্রামে ১৭০ বছর আগে বসতি স্থাপন করে।

এই গ্রামে আসার পর থেকে দীর্ঘদিন যাবৎ তারা জীবিকা নির্বাহী বেশ হিমশিম অবস্থার মধ্য দিয়েই দিন পার করেছেন। স্থানীয় প্রবীণদের কাছে জানা যায়,চৌধুরী বংশের পূর্ব পুরুষরা নদীতে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করতেন। 

দুর্গাপুরে আসে প্রথমে তারা বাঁশের চাটায় করা এক চালা ঘরে বসবাস করতেন।

একটা সময় পর তারা জীবিকার সন্ধানে দেশের উত্তরে অবস্থিত বর্তমান সুনামগঞ্জ জেলার হাওরে চলে আসেন,এবং এককালীন মাছের ব্যবসা শুরু করেন। তার পর থেকে তাদের আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। ধীরে ধীরে তারা ব্যবসার সুবাধে একটা নির্দিষ্ট সময় পর পর ছোট ছোট নৌকা দিয়ে আঞ্চলিক কাচা পয়সা ক্ষেত রৌপ্য মুদ্রা দূর্গাপুর গ্রামে আনতে শুরু করে। এইভাবে একটা সময় পর ধন সম্পদের আভিজাত্যে তারা চৌধুরী খেতাবে সমাজে খ্যাতি অর্জন করে। অতএব পর চূড়ান্ত ভাবে চৌধুরী বাড়িতে নির্মাণ হতে শুরু করে একের পর এক অট্রালিকা ও বিভিন্ন স্থাপনা, ।

অর্থাৎ বর্তমানে যে দৃশ্যমান চৌধুরী বাড়ির স্থাপনাগুলো মাথা উচু করে দাঁড়িয়ে আছে এগুলো ১৩২২ বাংলা ৩ রা অগ্রহায়ণ থেকে নির্মিত হয়েছে। 

তৎকালীন সময়ে পরিবারের প্রধান ছিলেন গিরিশ চন্দ্র চৌধুরী।

Post a Comment

আমাদের ওয়েবসাইটে ভিজিট করার জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।আমাদের সাইট ভালো লেগে থাকলে কমেন্ট করে জানাবেন।আপনাদের মতামতের উপর ভিত্তি করে পোস্ট করা হবে ধন্যবাদ।

Previous Next

نموذج الاتصال